শীতে গোসলের ভয় কাটানোর টোটকা

লাইভ ডেস্ক
২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪২ অপরাহ্ণ
শীতে গোসলের ভয় কাটানোর টোটকা

শীত এলেই অনেকের দৈনন্দিন অভ্যাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটে গোসল নিয়ে। বছরের অন্য সময় যেটা স্বাভাবিক রুটিন—শীতে সেটাই হয়ে ওঠে একধরনের ‘দুর্ভোগ’। হাড়–কাঁপানো ঠান্ডায় পানি ছোঁয়া মানেই তীক্ষ্ণ শিরশিরে অনুভূতি, আর তাই অনেকেই সপ্তাহের পর সপ্তাহ গোসল এড়িয়ে যান। কিন্তু শীতে গোসল না করার অভ্যাস শরীরের পরিচ্ছন্নতা, ত্বক–স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পর্যন্ত সার্বিকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে সুখবর হলো—গোসলকে ভয়ের কাজ না বানিয়ে, বরং আরামদায়ক অভ্যাসে পরিণত করার খুব সহজ উপায় আছে। শীতের কনকনে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে নিচে দেওয়া হলো কিছু কার্যকর টিপস, যা গোসলকে শুধু সহনীয়ই নয়—বরং উপভোগ্য করে তুলতে পারে।

হালকা গরম পানি: শীতের প্রথম সঙ্গী

শীতকালে গোসলের ক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার রীতিমতো উদ্ধারকর্তার মতো। ঠান্ডা পানি শরীরকে শকে ফেলতে পারে, ত্বকও দ্রুত শুষ্ক হয়ে যায়। অন্যদিকে হালকা গরম পানি শরীরকে আস্তে আস্তে উষ্ণ করে তোলে। তবে খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করা ঠিক নয়—এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে চুলকানি, র‍্যাশ ও স্কিন ফ্লেকিং বাড়ায়।

 

ছোট ও কার্যকর গোসল

দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে গোসল করার প্রয়োজন নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন—১০–১২ মিনিটই যথেষ্ট। কম সময় মানেই কম ঠান্ডা, কম পানি অপচয় এবং ত্বকের কম ক্ষতি।

 

গোসলের আগে সামান্য তেল

গোসলের ৫ মিনিট আগে নারকেল বা অলিভ অয়েল লাগালে ত্বকের উপর এক ধরনের ‘প্রোটেকশন লেয়ার’ তৈরি হয়। এতে পানি লাগলেও ত্বক অতটা শুষ্ক হয় না। বিশেষ করে যাদের শীতকালে স্কিন ফাটে বা রুক্ষ হয়ে যায়, তাদের জন্য এটি দুর্দান্ত কাজ করে।

 

সকালের বদলে দুপুরে

শীতের ভোরে গোসল করা সত্যিই কষ্টকর। যারা ঠান্ডা খুব বেশি সহ্য করতে পারেন না, তারা দুপুরে গোসল করলে আরাম পাবেন। তখন শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা বাড়তি সুবিধা দেয়, ঠান্ডা লাগার আশঙ্কাও কমে।

 

বাথরুমে ঠান্ডা বাতাস ঢুকতে দেবেন না

অনেক সময় গোসলের ভয়টার বড় অংশ আসে বাথরুমে ঢুকলেই ঠান্ডা হাওয়ার ধাক্কা থেকে। জানালা বা ভেন্টিলেশন খুব খোলা থাকলে তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে নিন। চাইলে উষ্ণ ম্যাট বা গরম আলোও ওয়াশরুমের পরিবেশকে আরামদায়ক করতে পারে।

 

শরীরকে প্রস্তুত হতে দিন

একেবারে মাথা বা কাঁধে পানি ঢাললে শরীর শকে চলে যায়। প্রথমে হাত–পা ভিজিয়ে শুরু করুন, এরপর ধীরে ধীরে পুরো শরীর।

 

গোসল শেষে

শীতকালে ত্বক আর্দ্রতা হারায় খুব দ্রুত। গোসলের ২–৩ মিনিটের মধ্যেই ময়েশ্চারাইজার লাগালে পানি ধরে রাখে। গ্লিসারিন, শিয়া বাটার বা হাইড্রেটিং লোশন খুব ভালো ফল দেয়।

 

যারা শীতে গোসল করেন না...

গোসল করতে কষ্ট লাগে—এটা স্বাভাবিক। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে সমস্যা তৈরি হয়। তাই—একদিন পরপর গরম পানিতে ছোট গোসল করার অভ্যাস গড়ুন। গোসল না করলে হট টাওয়েল বাথ—গরম ভেজা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে নেবেন। ন্যূনতম নিজের শরীরের নোংরা–সংবেদনশীল অংশগুলো—মুখ, গলা, বগল, পা— পরিষ্কার রাখুন। মনে রাখবেন, শীতে ঘাম কম হয় ঠিক, কিন্তু ময়লা–ব্যাকটেরিয়া জমে ত্বক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

 

গোসলকে আনন্দদায়ক করার কৌশল

গোসলের আগে ২ মিনিট হালকা ব্যায়াম করলে শরীর গরম হয়ে যায়। সব প্রয়োজনীয় জিনিস হাতের কাছে রাখলে গোসল দ্রুত শেষ হয়। উষ্ণ, নরম আলো গোসলকে আরামদায়ক করে তোলে।

Read more — ফিচার
← Home